অনেস্টের সদস্যদের জন্য ‘রিয়েল ওয়ালেট’।
সাধারণত বড়ো বড়ো প্রতিষ্ঠানগুলো ক্যাশ ব্যাক দেয়। মানে ধরুন, কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে আপনি ১০০০ টাকার জিনিস কিনলেন, তারা আপনাকে ১০ টাকা ক্যাশ ব্যাক দিলো। কিন্তু এটাকা আপনাকে সরাসরি তা ক্যাশ দেবে না। ওটা আপনার নামে ক্রেডিট হবে, পরে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো পণ্য কিনতে গেলে আপনি সেই ১০ টাকা ছাড় পাবেন। অথবা আপনি বিভিন্ন কেনাকাটার পর ক্যাশব্যাকের টাকাটা জমিয়ে তা দিয়ে একসাথে পণ্য কিনতে পারেন, বা ছাড় নিতে পারেন।যেমন,আপনার ক্যাশব্যাক জমলো ১০০০ টাকা। আপনি পরে ঐ প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০০ টাকার পণ্য কিনতে পারেন বা কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে ১০০০ টাকা ছাড় নিতে পারেন।এটাকে বলা হয় ‘ভার্চুয়াল ওয়ালেট’। অনেকে ‘ইনভিজিবল ওয়ালেট’ ও বলেন। যে টাকাটা আপনার হাতে আসবে না এবং আপনি তা প্রয়োজনে অন্য জায়গায় খরচ করতে পারবেন না। ঐ প্রতিষ্ঠানেই খরচ করতে হবে। অর্থাৎ এ টাকার লিমিটেশন আছে। যতক্ষণ আপনি ঐ প্রতিষ্ঠানের কিছু না কিনছেন ততক্ষণ তা কাজে লাগছে না।সাধারনত ক্রেতা ধরে রাখার জন্যই এ এধরণের অদৃশ্য এবং পরোক্ষ ওয়ালেট তৈরি করা হয়।এবার আসি ‘রিয়েল ওয়ালেট’ প্রসঙ্গে। আচ্ছা, কোনো প্রতিষ্ঠান যদি ‘ভার্চুয়াল ওয়ালেট’ তৈরি না করে আপনার জন্য ‘রিয়েল ওয়ালেট’ তৈরি করে তাহলে কেমন হয়? যেখান থেকে প্রয়োজনে আপনি ক্যাশ টাকা তুলে নেবেন, জরুরি চিকিৎসা, বাচ্চার স্কুলে ভর্তি বা অন্য কাজে লাগাবেন। যে প্রতিষ্ঠান এ ওয়ালেট তৈরি করছে সেখানে খরচের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এ ওয়ালেটের টাকা আপনি চোখে দেখবেন, হাতে নিয়ে বাড়ি যাবেন, নিজের দরকারে খরচ করবেন। অনেকটা ব্যাংক থেকে নগদ টাকা তোলার মতো। এটা ভার্চুয়াল ওয়ালেটের মতো নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কেনাকাটায় সীমাবদ্ধ টাকা নয়। আপনার প্রয়োজনে যেখানে ইচ্ছে সেখানে খরচ করবেন।আমাদের জানামতে সাধারনত কোনো প্রতিষ্ঠান তার গ্রাহকদের জন্য এরকম রিয়েল ওয়ালেট তৈরি করেনা। কারণ তাহলে ক্রেতা ধরে রাখা যাবে না। রিয়েল ওয়ালেটের টাকা তুলে তিনি হয়তো পাশের দোকান থেকে কেনাকাটা করবেন। তারা ‘ভার্চুয়াল’ বা ‘অদৃশ্য ওয়ালেট’ তৈরি করে যার মাধ্যমে ক্রেতা শুধু তাদের কাছ থেকেই কেনাকাটা করতে পারবেন। ( তবে ক্রেডিট কার্ডের ক্যাশব্যাক এখানে বিবেচনা করা হয়নি, শুধু পণ্য বা সেবা বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।)আনন্দের ব্যাপার হচ্ছে, মানবিক পণ্য সরবরাহ প্রতিষ্ঠান ‘অনেস্ট’ তার সদস্যদের জন্য ‘রিয়েল ওয়ালেট’ তৈরি করতে যাচ্ছে।আপনারা জানেন, মানবিক প্রতিষ্ঠান ‘অনেস্ট’ এবং ‘পে ইট ফরোয়ার্ড ‘ একটি রেস্টুরেন্ট শুরু করতে যাচ্ছে, যাতে অন্যান্য রেস্টুরেন্টের ৪০০/৫০০ টাকার খাবার মাত্র ১০০ টাকায় বিক্রি করা হবে।এ রেস্টুরেন্টই প্রথমবারের মতো এর সদস্যদের জন্য ‘রিয়েল ওয়ালেট’ তৈরি করবে। এখানে ৫০০ টাকা ( ৫টি মিল) কেউ খরচ করলে তাঁর ওয়ালেটে একটি কোড নাম্বারের বিপরীতে ১০ টাকা জমা হবে। ক্রেতা চাইলে তৎক্ষনাৎ টাকাটা তুলে নিতে পারেন, বা জমিয়ে তাঁর পছন্দমতো সময়ে তুলে নিতে পারবেন।টাকাটা নিয়ে তিনি যা ইচ্ছে তাই করবেন। টাকাটা নগদে হাতে তুলে দেওয়া হবে।এ টাকা অনেস্টের রেস্টুরেন্টে টাকাটা খরচ করার বাধ্যবাধকতা নেই। আপনার টাকা আপনি তুলে নিয়ে যেখানে ইচ্ছা খরচ করবেন। এরকম ওয়ালেট তৈরির উদ্যোগটি কেমন হবে?মতামত দিলে খুশি হবো। যাদের আগ্রহ আছে তাঁরা কমেন্টে তা জানাতে পারেন।ভালো কথা, এ রেস্টুরেন্ট কিন্তু প্রফিট মিশন নিয়ে নামেনি। মধ্যবিত্তদের প্রতি মমত্ববোধ থেকে এ চ্যারেটির জন্ম, যাদের হাতে আমরা ‘মায়ের হাতের রান্না’ তুলে দিতে চাই। তাই ‘ক্যাশব্যাক’ এর পরিমাণ কম মনে হলেও ‘লাভ’ করা ছাড়াই এটি দেওয়া হচ্ছে, ব্যাপারটি দয়া করে মনে রাখবেন।এ রেস্টুরেন্টের আরেকটি বৈশিষ্ট্যের কথা বলে শেষ করছি। তাহলো,এখান থেকে কেউ অভুক্ত অবস্থায় ফেরত যাবেন না। আমাদের যেকোনো কর্মীকে কেউ কানে কানে ‘একটু সমস্যায় আছি” এটা জানালেই আমরা অত্যন্ত যত্নের সাথে তাঁকে বিনামূল্যে আপ্যায়ন করবো। অতিথি আমাদের কাছে দুনিয়ার সবচে সম্মানিত মানুষ- তাঁকে খালিমুখে ফেরত দেওয়া কি যায়?
(পর্যায়ক্রমে কয়েকমাসের মধ্যে অনেস্টের অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রেও এ ওয়ালেট চালু করা হবে,যা আপনার প্রয়োজনে কাজে লাগবে। অনেস্ট আপনার জন্যই নিবেদিত থাকবে, কারণ আপনার অবস্থান আমাদের বুকের অনেক ভেতরে। ক্যাশব্যাক বিশ্লেষণে আমার কোনো ভুল থাকলে শুধরে দিলে কৃতজ্ঞ থাকবো)